Saturday, December 13, 2008

চাঞ্চল্যকর রাহেলা হত্যাকাণ্ডঃ চার বছর পরেও যে মামলা অমিমাংসিতই রয়ে গেল

আজ থেকে চার বছরেরও কিছু বেশি সময় আগের ঘটনা। রাহেলা ধর্ষণ এবং হত্যা মামলার কথা বলছিলাম। যে নৃশংস ঘটনা আমাদের প্রচার মাধ্যমগুলোতেও তেমনভাবে সাড়া জাগাতে পারেনি, আজো বিচারের আশায় আদালতে লটকে আছে।

রাহেলার পুরো নাম ছিল রাহেলা আক্তার লিমা। ২০০৪ সালে তাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মশাররফ হলের পেছনে ঝোপ এলাকায় তিন মানুষ নামের কলঙ্ক গণধর্ষণ শেষে হত্যা করার চেষ্টা করে রাহেলার গলায় ছুড়ি চালিয়ে। এরপর তার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য মুখে এসিড ঢেলে দেওয়া হয়। ঘটনার তিনদিন পর রাহেলাকে উদ্ধার করা হয় ঝোপের মধ্যে থেকে, ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় মৃতপ্রায়। বাইশ বছর বয়সী অসম্ভব প্রাণচাঞ্চল্যের অধিকারিনী এই তরুণী সেযাত্রা বেঁচে গেলেও শেষ রক্ষা করা যায়নি। তেত্রিশদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রাহেলা ২০০৪ সালের ২৪ আগস্ট।

এহেন ঘৃণ্য হত্যাকান্ডের আশু বিচারকার্য সম্পাদন এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রদান সবার কাম্য। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে রাহেলা হত্যা মামলার প্রতিটি পর্যায়েই দীর্ঘসূত্রিতা পরিলক্ষিত হয়। হত্যাকাণ্ড সংঘটনের পর প্রথমদিকে প্রচারমাধ্যমগুলোতে কিছুটা সাড়া জাগালেও এক সময় তা থেমে যায়। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ট্রাইবুনাল-১ এ বিচারাধীন এ মামলা আইন শালিশ কেন্দ্রের সহযোগিতায় ২০০৬ সালে সর্বপ্রথম শুনানীর জন্য উত্থাপিত হয়। তারপরই জানা যায় যে মামলা সংশ্লিষ্ট জরুরী নথিপত্র খোঁয়া গেছে। ইতোমধ্যে মামলার প্রধান আসামী বিদেশে পাড়ি জমায় এবং অন্যান্য আসামীরা সুকৌশলে জামিনে মুক্তি পেয়ে ঘুরে বেড়াতে থাকে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে রাহেলার মৃত্যুর পর তার কবরের জায়গাটুকুও স্বামী চান মিয়ার বাড়িতে হয়নি। রাহেলাকে তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে দাফন করা হয়। রাহেলা মারা যাবার ছয় মাস পরেই চান মিয়া আবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রায় দুই বছর অতিবাহিত হয়ে যায়, মামলাটি হয়তো মানুষের স্মৃতি থেকে হারিয়ে যেত যদি না কতিপয় নারী অধিকারকর্মী এবং বাংলা ব্লগাররা সোচ্চার হতেন। বিভিন্ন ব্লগ্লীয় প্লাটফর্মে মামলাটির গুরুত্ব নিয়ে লেখালেখি হতে থাকে, ধীরে ধীরে অনেকেই এর সাথে যোগ দেন। রাহেলার জন্য দ্রুত ন্যায় বিচারের ধ্বনি চারদিকে উচ্চারিত হতে থাকে। বাংলা ব্লগ, সংবাদপত্র, ফেসবুকগ্রুপ এবং আই-পিটিশন ইত্যাদির মাধ্যমে অনলাইনে একটা বেশ বড় প্রচারাভিযান সংঘটিত হতে থাকে। অফলাইনে এ বিষয়ে জনগণের সচেতনতা জাগ্রত করার জন্য প্রতিবাদ বিক্ষোভ এবং মানব-বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মামলাটিকে সামনে এগিয়ে নিতে আদালতের উপরে চাপ প্রয়োগ করার জন্য বাংলা ব্লগারদের এই চলমান প্রচেষ্টা প্রচার মাধ্যমের নজর কাড়ে এবং ক্রমশ: প্রতিবেদন এবং টিভি রিপোর্ট প্রচার হতে থাকে। শেষপর্যন্ত ২০০৮ এর জানুয়ারী মাসে মামলাটি পুনরায় চালু হয় এবং এপ্রিল মাসে হারিয়ে যাওয়া নথিপত্র আশ্চর্য্যজনকভাবে খুঁজে পাওয়া যায়। তদন্তকারী কর্মকর্তারা পরবর্তীতে দাবী করেছেন যে নথিপত্র ‘সবসময় সেখানে ছিল'। বলার অপেক্ষা রাখে না যে বিচারের জন্য যুদ্ধ এখনও একটা দীর্ঘমেয়াদী সংগ্রাম। ইতোমধ্যেই এই মামলা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এবং মুখ্য প্রত্যক্ষদর্শীরা অসহযোগিতা শুরু করছে। কিন্তু ব্লগাররা ছেড়ে দিচ্ছেন না। মানুষের স্মৃতিতে রাহেলাকে সজীব রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে, যেন অন্যায়কারীকে আইন ও বিচারের সম্মুখীন করা যায়; যদিও দেরী হয়ে গেছে, কিন্তু রাহেলা আখতার লিমাকে বঞ্চিত করা হয় নাই। সাম্প্রতিক সময়ে এক টিভি সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের একজন সম্মানিত শিক্ষাবিদ ও লেখক প্রফেসর মুহাম্মদ জাফর ইকবাল রাহেলার ন্যায় বিচারের বিষয়টির বারবার উল্লেখ করেন।

এ বছরের এপ্রিল মাসে সরকারের দায়িত্বশীল বিভাগ মামলাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘চাঞ্চল্যকর মামলা মনিটরিং সেলে’ অন্তর্ভূক্ত করা হয় এবং দ্রুত বিচার আইনে সম্পন্ন করার নির্দেশ প্রদান করা হয়। বিচারের জন্য বেঁধে দেয়া সময় ছিল অক্টোবর পর্যন্ত এবং বিশেষ প্রয়োজনে ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত বাড়তি সময় প্রদান করা হয়। রাহেলার চিকিৎসক শহীদুল ইসলাম এবং তদন্ত কর্মকর্তার গড়িমসির কারণে সাক্ষ্য গ্রহণের সময় বাড়তে বাড়তে নভেম্বরের শেষ দিকে সকল সাক্ষ্য গ্রহণের কাজ শেষ হয়। মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য্য করা হয়েছে ৬ জানুয়ারি। এদিন মামলার আসামী সনাক্তকরণ হবে তিনশত বিয়াল্লিশ ধারায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, মামলার প্রধান আসামী এখনো পলাতক এবং বাকিরা আজো জামিনে মুক্ত।

আমরাও চাই এই মামলার আশু নিষ্পত্তি। গত চার বছরে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর গড়িমসির কারণে অনেক জল ঘোলা হয়েছে, রাহেলা হত্যা মামলা ন্যায় বিচারের আশায় এখনো আদালতে ধুঁকছে। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং রোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচারকার্যের আশু সম্পাদনাই হোক নতুন বছরের ঊষালগ্নে আমাদের দৃঢ় প্রত্যয়।

---------------------------------------

প্রথম প্রকাশঃ সচলায়তন, ২০০৮।

Sunday, November 30, 2008

কৃত্রিম মিষ্টিকারকঃ চিনির বিকল্প হিসেবে কতটুকু নিরাপদ ?

চিনি আমাদের সকলের নিত্যদিনের আহারের অংশ। তবে খুব বেশি পরিমাণ চিনি গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। খাদ্যাভাসে অধিক পরিমাণে চিনি থাকলে তা রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। যা শেষ পর্যন্ত ওজন বাড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই অনেকেই আজকাল কৃত্রিম মিষ্টিকারকের দ্বারগ্রস্থ হচ্ছেন। যেগুলোতে কম ক্যালোরি থাকার কারনে ওজন বেড়ে যাবার ভয় নেই, অন্যদিকে খাবারের মিষ্টতা অটুট রাখতেও এদের জুড়ি মেলা ভার।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে কৃত্রিম মিষ্টিকারকের পেছনের রহস্য কি এবং এগুলো কাজ করে কিভাবে? কৃত্রিম মিষ্টিকারকগুলোর মধ্যে এমন কিছু রাসায়নিক অথবা ভেষজ উপাদান থাকে যারা খাদ্যের মিষ্টতা চিনির চেয়ে বহুগুণে বাড়িয়ে দেবার ক্ষমতা রাখে রক্তে ক্যালোরির মান একদম নিয়ন্ত্রণে রেখে। তাই দৈহিক ওজন কমিয়ে আনতে চাইলে অথবা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে এগুলোর বিকল্প পাওয়া দুষ্কর।

ডায়াবেটিসে যারা ভুগে থাকেন অনেকেই এসব কৃত্রিম মিষ্টিকারক ব্যবহার করে আসছেন তাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভাসে। কারন ঐ একটাই, কারন এগুলো রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ না বাড়িয়ে খাদ্যে মিষ্টতা আনার ক্ষমতা রাখে। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, কিছু কিছু কৃত্রিম মিষ্টিকারকযুক্ত খাদ্য দ্রব্যাদি তার রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতেও পারে। উদাহরণ হিসেবে চিনিমুক্ত দই অথবা চিনিমুক্ত কুকিজ অথবা চকোলেটের কথা বলা যেতে পারে। এসব খাদ্যে বেশিরভাগ সময় যেসব কৃত্রিম মিষ্টিকারক ব্যবহার করা হয় সেগুলোতে সরবিটল অথবা ম্যানিটল থাকে, এবং এসব উপাদান রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতেও পারে। আবার কিছু চিনিমুক্ত খাদ্যের মধ্যে আটা/ময়দা থাকতে পারে যা রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে সহজেই।

বিজ্ঞনীরা অনেক গবেষণা করেছেন এসব কৃত্রিম মিষ্টিকারকদের নিয়ে। এবং উনারা এগুলোর দৈনিক গ্রহণের নিরাপদ মাত্রা স্থির করে দিয়েছেন। যেগুলোতে এস্পারটাম(Aspartame) থাকে সেগুলো রান্নার কাজে ব্যবহার করা একদম নিরাপদ নয়। এবং আপনার ওজনানুযায়ী কেজিপ্রতি দৈনিক ৫০ মিলিগ্রাম গ্রহণ করা যেতে পারে। ধরুন আপনার দৈহিক ওজন যদি ৬৫ কেজি হয় তবে আপনি দৈনিক গ্রহণ করতে পারবেন (৬৫ x ৫০) মিলিগ্রাম অর্থাৎ ৩ দশমিক ২৫ গ্রাম। স্যাকারিন(Saccharin) জাতীয় মিষ্টিকারকগুলো রান্নার জন্য উপযোগী কিন্তু ওজনানুযায়ী কেজিপ্রতি ৫ মিলিগ্রামের উপরে গ্রহণ করা একদম উচিত হবেনা। এক্সালফেম(Acesulfame K) জাতীয় মিষ্টিকারকগুলোর ওজনানুযায়ী দৈনিক গ্রহণযোগ্য মাত্রা হল ১৫ মিলিগ্রাম কেজিপ্রতি। সুক্রালোজ(Sucralose) জাতীয়গুলো রান্নার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে কিন্তু গ্রহণযোগ্য মাত্রা ৫ মিলিগ্রাম কেজিপ্রতি।

সংবাদপত্র এবং ইন্টারনেটে কৃত্রিম মিষ্টিকারকগুলো কতটুকু নিরাপদ তা নিয়ে নানান সময়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগের ভাষ্য ছিল কৃত্রিম মিষ্টিকারকগুলো স্বাস্থ্যগত সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে যার মধ্যে ক্যান্সারের নাম উল্লেখযোগ্য। কিন্তু আমেরিকার ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করেছে এবং সাধারণ মানুষ নির্দিধায় ব্যবহার করতে পারে বলেছে। তবে যাদের বিরল পিকেইউ(hereditary disease phenylkeronuria)অসুখ রয়েছে তাদের এস্পারটাম(Aspartame) জাতীয় মিষ্টিকারকগুলোকে ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে।

খাদ্যাভাস থেকে শুধুমাত্র চিনির অপসারণ ঘটালেই যে দেহে ক্যালোরির মান কমে যাবে আমাদের সেই ভুল ধারনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সেইসাথে সবাইকে সচেতনভাবে বিকল্প চিনি অথবা কৃত্রিম মিষ্টিকারকের ব্যবহার করা উচিত।

[তথ্যসূত্রঃ মায়োক্লিনিক ডট কম]

--------------------------------

প্রথম প্রকাশঃ সচলায়তন ২০০৮।

Monday, November 10, 2008

গদ্য লিখতে পারিনা !

কি লিখতে যাচ্ছি নিজেই জানিনে, তাই পাঠকদের সতর্ক করে দিতে চাই যে এই লেখা পড়বার পর উনাদের মনে হতে পারে অযথা নিজের সময় নষ্ট করলাম। অতএব সম্মানিত পাঠকদের যদি কিছু সময় হাতে থাকে নষ্ট করবার মতন তাহলে লেখার বাকিটুকু পড়তে পারেন।

লিখতে গিয়ে স্পর্শ ভাইয়ার কথা মনে পড়ে গেল। সামহোয়ারিনে উনি (অ)গাণিতিক বলেই অধিক পরিচিত। উনার আব্‌জাব লেখাগুলোর আমি বেশ ভক্ত ছিলাম। ভাইয়ার সাথে আমার ব্যক্তিগত ভাবেও তেমন পরিচয় নেই তাই জানিওনা কেন আজকাল লিখছেন না ভাইয়া। তবে নতুন লেখা পেলে খুব ভাল লাগত উনার থেকে। যাই হোক মূল প্রসঙ্গে আসি এবার, নুশেরা আপু মাঝেসাঝে আমাকে প্রশ্ন করে থাকেন যে তুমি গদ্য লেখনা কেন? উনার সাথে তাল মিলিয়ে হয়তো আরো কয়েকজন আমাকে একই প্রশ্ন করেছেন। কিন্তু জবাব যে আমার জানা নেই তা বলাই বাহুল্য। নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে কোথায় থেকে কোথায় যেন হারিয়ে যাই। তবু এই প্রশ্নের সদুত্তর হয়তো এখনো যোগাড় হয়নি। তবুও ঠেস দিয়ে দাঁড় করালাম এই প্রশ্নের অগোছালো কিছু উত্তর, মনের ভেতরেই।

আমি কিছু লিখতে বসলে এক প্রসঙ্গে থাকতে পারিনা। হঠাৎ কিভাবে যেন প্রসঙ্গ বদলে যায় তার উপলব্ধিও হয়না। যেমন লিখতে বসার পরমুহূর্তে ভাবছিলাম অকবিতা টাইপের লেখা লিখিনা অনেকদিন তাই একটা চেষ্টা করে দেখা যাক। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবেই চিন্তাটা বাতিল করে দিলাম। ভাবলাম হাবিজাবি মনে যা চায় তাই লিখি। সেখান থেকে স্পর্শ ভাইয়ার প্রসঙ্গ এবং ইত্যাদি ইত্যাদি। মনে হচ্ছে প্রসঙ্গ থেকে আবার দূরে চলে যাচ্ছি। আচ্ছা, যা বলছিলাম আরকি। কোন প্রসঙ্গে লিখব তাই ভেবে পাইনে লিখতে বসে। গদ্য বের হবে কিভাবে বলুন?

এবার অন্যদিকগুলোতে আলোকপাত করা যাক, আমার বাংলা বানান মনেহয় দিনে দিনে দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে যাচ্ছে। আর ভুল বানানে বাংলা লেখা খুবই দৃষ্টিকটু দেখায়। আমার লেখার মাঝে কেউ কোনও ভুল বানান দেখলে অবশ্যই জানিয়ে দেবেন দয়া করে। অত্যন্ত বাধিত হব। গদ্য ধরনের লেখাগুলোর জন্য পর্যাপ্ত বাংলা শব্দের ভাণ্ডার থাকা খুব জরুরি বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। যা আমার কাছে নেই। তাই তেমন গদ্য লেখার যোগ্যতা কোথায় ? এর সাথে পর্যাপ্ত বাংলা সাহিত্য চর্চার অভাব, ব্যাকরণগত দুর্বলতা, জীবন-দর্শন সম্পর্কে ধারনার অপ্রতুলতা, ব্যক্তিগত দ্বিধা ইত্যাদি তো আছেই।

আরেকটা সমস্যা হয় আমার লিখতে গিয়ে, সেটা হচ্ছে লেখার শেষ পর্যায়ে এসে ঠিক বুঝে উঠতে পারিনে কিভাবে শেষ করা যায় লেখাটা। এ প্রসঙ্গে পূর্ব-অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে গেল। একবার এক ই-ম্যাগাজিনের সম্পাদক ভাইয়ার চাপাচাপির কারনে একটা হাবিজাবি লেখা দিতে হয়েছিল। প্রবন্ধ টাইপের লেখা ছিল সেটা, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি নিয়ে ছিল যতদূর মনে পড়ছে। ওটা লিখতে গিয়ে কিছুতেই আমি উপসংহার অংশটা যুতসইভাবে লিখতে পারছিলাম না। যাই লিখি মনঃপুত হচ্ছিল না নিজের কাছেই। তারপর সম্পাদক ভাইয়াকে গিয়ে ধরি। উনি প্রথমে একচোট হেসে নিলেন তবুও উনি দিকনির্দেশনা না দিলে হয়তো ঐ লেখাটা শেষ করাই যেতনা। লিখতে লিখতে আবার প্রসঙ্গ থেকে পিছলে যাচ্ছি মনেহয়। পাঠকরা সেটা বেশ বুঝতে পারছেন এতক্ষণে। রাজনৈতিক বক্তাদের বক্তৃতার মতন লেখাটি দীর্ঘায়িত করে পাঠকদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেবার উদ্দেশ্য আমার একদমই নেই। শেষ করার আগে আরেকবার তাই বলব যে গদ্য লেখা বোধকরি আমাকে দিয়ে হবেনা।

---------------------------------
প্রথম প্রকাশঃ সামহোয়ারিন ব্লগ, ২০০৮।

Saturday, October 18, 2008

বিক্ষিপ্ত অনুরণন

পুষ্পাকীর্ণ এই সমাধিক্ষেত্র
নিদারুণ মর্মপীড়া জাগায়
অন্তর্নিহিত শক্তি থেকে
অশ্রুগুলো বিস্মৃত হতে চায়।

গতানুগতিক কাজের মাঝে
হৃদয়ানুভূতি প্রকাশের অপৌনঃপুনিকতা,
অনাবশ্যক বিবেচিত অপ্রকাশিত কথামালা,
আলো-আঁধারির খেলা,
অশ্রুভেজা পাপড়িগুলো,
দৈব সম্ভাবনার অপব্যবহার,
অকুতোভয় পদচারণ এবং স্নেহার্দ্র দৃষ্টি,
উচ্চপ্রশংসা ও আক্ষেপের রহস্যময়তায়
হারিয়ে যাওয়া অব্যক্ত ভালবাসা,
কিংবা না পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তায়
শুধু একটি নাম অনুরণিত হচ্ছে, বিক্ষিপ্তভাবে।


-----------------------------
প্রথম প্রকাশঃ সচলায়তন, ২০০৮।

Monday, September 29, 2008

ভাঙ্গা আয়নার প্রতিবিম্ব

ভাঙ্গা আয়নার প্রতিবিম্ব আজ মুখোমুখি
বিকৃত সেই প্রতিবিম্ব চেয়ে থাকে
আয়নার ভাঙ্গা টুকরোগুলো থেকে।
বিস্ময়াহত হয়ে খুঁজছি
মিথ্যে এই প্রতিবিম্বের উৎসকে;
হয়তোবা নিজেকে হারিয়েই ফেলেছি
চুরমার হয়ে যাওয়া আয়নার মাঝে।

পিটপিট করে তাকানো
শতশত চোখের মাঝে
অবিশ্বাসের ছায়া দেখতে পাই,
পরীক্ষা করে দেখতে চাইছে
আয়নার অবশিষ্ট টুকরোগুলোর মতন।

রূপালী প্রলেপের পেছনে
লুকিয়ে থাকা গাঢ় বিষণ্নতা
বাঁকা হাসি হাসছে বিজয়ের উৎসবে।
মেঝেতে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য প্রতিবিম্ব
বন্দী করতে চাইছে আমাকে
ঐ ভাঙ্গা আয়নায় মাঝে।

Sunday, September 21, 2008

তোমায় পড়ে মনে

তোমায় মনে পড়ছে
সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয়
পাখির অবিরাম কলরব,
রাস্তার কুকুরের চিৎকার
একটু পানির জন্য হাহাকার;
রিমঝিম নূপুরের নিক্কন
টুপটাপ বৃষ্টির গুঞ্জন
সাগরের প্রচণ্ড গর্জন
আষাঢ়ের প্রবল বর্ষণ;
ব্যস্ত শহরের কোলাহল
আশা-শঙ্কার দোলাচল;
ক্ষুধার্ত মানুষের চিৎকার
ধনীর অট্টালিকার মর্মর;
তবুও তোমায় পড়ে মনে
নিরন্তর, সারাবেলা।
------------------------------
প্রথম প্রকাশঃ সচলায়তন,২০০৮।

Saturday, September 6, 2008

মায়াবী মুহূর্তগুলো

জ্যোৎস্নালোকিত রাতে
চমৎকার মুহূর্তগুলো আসে
যখন কোনও অপ্সরা
চুমু দিয়ে যায় কপোলে;

শুধু একটি চমৎকার মুহূর্তকেই
আঁকড়ে ধরে থাকি
যেন অন্যসব মুহূর্তগুলো আসেইনি।

বসন্তের বাতাসে ফুলের সৌ্রভ,
দীর্ঘস্থায়ী ভালবাসার পরশ,
সেকি আরো মায়াবী নয় ?

যেসব মুহূর্তগুলো
মায়াবী পরশ বুলিয়ে
নিভে আসা ভালবাসার
প্রদীপকে পুনরুদ্দীপ্ত করে,
তা যেন আমাদের
দৃঢ়প্রত্যয়ের শিক্ষা দেয়।

Sunday, August 24, 2008

এই আমি একাকী !

আমি একাকী
বড় বেশী একাকী;
উপেক্ষিত,
আহত,
দলাপাকানো কাগজের মত
ছুঁড়ে ফেলা এককোণে।

আমি একাকী
চারপাশে কেউ নেই
নিরাপত্তা দেবার মতন,
দেখার কেউ নেই
আমার যন্ত্রণা।

চিৎকার করে উঠি হঠাৎ
তবে তাতে কোনও আশা নেই,
আমি খুব বেশী একা
এবং তা কেউ জানেনা।

Sunday, August 10, 2008

অর্ধস্ফুট গোলাপের জন্য

প্রস্ফুটিত গোলাপ মনে করিয়ে দেয়
তোমার কথা
যার রঙ সবে দেখা দিয়েছে
মৃদুমন্দ বায়ুতে সুগন্ধির আভাস
যার সকল কিশলয় অর্ধফোটা।

আগামীর উৎকর্ষ তোমার পথে পথে
জ্বালাবে ভালবাসার দীপশিখা,
বিচরণ হবে তোমার ঐ মহাকাশে
সমুদ্রের প্রান্তে-প্রান্তরে
ভালবাসার স্রোতে ভেসে।

সাত রাজার গুপ্তধন খুঁজে বের করার মত
আবিষ্কার করছি তোমাকে
তোমার সৌন্দর্য অপরিমেয়
তুমি হে অর্ধস্ফুট গোলাপ কন্যা।


----------------------
১১ই আগস্ট, ২০০৮।

Saturday, August 2, 2008

নীহারকণায় লেখা শোকগাঁথা

কোনও এক স্নিগ্ধ সকালে
শীতল সূর্যোদয় লিখে চলেছে
আমাদের শোকগাঁথা নীহারকণায়,
হাজারো তুষারকণা হারিয়ে যায়
আলোর উৎসে।
প্রবল কোনও ঘূর্ণিপাকে
হারিয়ে যায় সবই,
যেন মৃত্যুচিন্তাও আমাদের ভাবিত করেনা।
অনবদ্য কবিতার মানে দাঁড়ায় এক স্তবকেই
যেমন সব সাদা কাগজই বলে এক কথা।

আঘাত পাওয়া অনুভূতিগুলো
পারলৌকিক বলেই যেন ক্ষণস্থায়ী,
তেমনি সংক্ষিপ্ত যেন কতগুলো হাড়ের
ধরে রাখা আমাদের নশ্বর দেহ।

বাগ্নীতা হারিয়ে যায়
প্রায়শ্চিত্তের দুঃশ্চিন্তায়,
মনে রাখা কঠিন তোমার হাতে রেখে হাত।
আজ চাই স্তব্ধ করে দেয়া কোনও স্পর্শ
ক্ষণস্থায়ী এই আবহাওয়ার পরিবর্তনে।

-------------------------------

প্রথম প্রকাশঃ সচলায়তন, ২০০৮।

Monday, July 21, 2008

নামহীন হাবিজাবি- ৩

বাইরে বিকাল। আস্তে আস্তে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাইরে নিকষ কালো আঁধারে ঢেকে যাবে। সময়ের ডানায় ভর করে আরেকটা দিন চলে যাচ্ছে। বয়েসের হিসেবের সাথে যোগ করে গেল আরেকটা দিন। রেখে যাচ্ছে কিছু স্মৃতি অথবা বাড়ছে কিছু দীর্ঘশ্বাস। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসবে দুপুর রাত তারপর রাত হবে গভীর। তারপর ? তারপর আরেকটা নতুন দিন, নতুন সূর্যোদয়। আবার সেই গতানুগতিক জীবনধারা। বৈচিত্র্যহীন, গতানুগতিক জীবনের মাহাত্ম্য বর্ণনা করার জন্যেই হয়তো আমাদের এই বেঁচে থাকা। বেঁচে থাকি আমরা, নিরলস কর্মীর মতন লিখে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত আমাদের নিজেরই দিনলিপি। বর্ণনায় সাবলীলতা হয়তো নেই কিন্তু অনুভূতির কিছুমাত্র কম দেখিনা। মাতৃস্নেহে লালন করে যাচ্ছি আমাদের ফেলে আসা স্মৃতিগুলো। আনন্দময় স্মৃতিগুলো যেমন সঙ্গী তেমনি সঙ্গী ফেলে আসা দীর্ঘশ্বাসগুলো। বেঁচে থাকি আমরা, স্বপ্ন দেখছি নিয়মিত। পুরোনো স্বপ্নগুলো খানখান হয়ে ভেঙ্গে যায় আমাদেরই চোখের সামনে। স্বপ্নভঙ্গের সেই বেদনাকে তোয়াক্কা না করে আবারো স্বপ্নদেখার অভিলাষ জাগে মনে, স্বপ্ন দেখার সেই বিলাসিতা করতেই হয় আমাদের তাই আবারো স্বপ্ন দেখি আমরা। এর মাঝে কত ঝড়-ঝাপ্টা আসে, পাহাড় সমান প্রতিকূলতাগুলো শুষে নিতে চায় আমাদের। পঙ্গপালের মতন ঘিরে ধরে সবদিক থেকে। নিঃশ্বাস নিতে বড় কষ্ট হয় তখন, বাতাসে অক্সিজেনের যেন হঠাতই ঘাটতি হয়। তবুও প্রতিকূলতার পাহাড়কে জয় করি আমরা, অনেক সময় হয়তো তা সম্ভব হয়না কিন্তু হার মানার যে উপায় নেই। প্রকাণ্ড এই মহাযুদ্ধে আমাদের লড়ে যেতেই হয় শেষ নিঃশ্বাস থাকা পর্যন্ত। ছন্দহীন, বৈচিত্র্যহীন এই জীবনকে আমরা লালন করে যাই পরম যত্নে।

Thursday, July 17, 2008

সূর্যাস্তটাকে ধাওয়া করে যাই

সূর্যাস্তটাকে ধাওয়া করে চলেছি
সূর্যোদয়ের দেখা পাবো বলে
নিয়তিটাকে হন্যে হয়ে খুঁজছি
আশাটাকে ধার করতে পারবো বলে।

কল্পনাগুলো অদৃশ্য হয়ে
জবাবগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠবে
স্বপ্নেরা সত্য হবার মতই

আবারো সূর্যাস্তটাকে ধাওয়া করে চলি
নতুন প্রশ্নের জবাব পাবো বলে
আশাভরা হৃদয়কে ধাওয়া করে চলি
সত্যের দেখা পাবো বলে।
--------------------------------
প্রথম প্রকাশঃ সচলায়তন, ২০০৮।

Saturday, July 12, 2008

নিয়তি ও স্বপ্নেরা

স্বপ্ন দেখি আমি অমুক হব
নাকি স্বপ্ন দেখাই আমার নিয়তি ?

স্বপ্ন দেখি আমি স্বাধীনভাবে বাঁচবো
স্বপ্ন দেখি শংকাহীনভাবে ভালবাসবো
স্বপ্ন দেখি ডানামেলা পাখি হব।

অদৃষ্টে কি লেখা শুধুই বেঁচে থাকা
নাকি স্বপ্ন দেখাই আমার অদৃষ্ট ?

আজ তাই ভয় হয় স্বপ্ন দেখতে
কারণ,
স্বপ্ন দেখাই যে আমার নিয়তি।

Thursday, July 10, 2008

কথার পাহাড় ও আমি

কথার পাহাড় যেন জমাট বাঁধছে ভেতরে,
আমি অসহায় !
কতশত কথা বলার ছিল,
আমি অসহায় !

আটকে আছে আমার এই নিথর দেহ
শত কথার পাহাড়ের নিচে
সত্যিই নিথর ?
নাকি আছে কিছু প্রাণের অবশেষ ?
আছে, আছে !!
নইলে কে বইবে কিছু অসহনীয় যন্ত্রণা ?
বলা হলোনা সেসব কিছুই
পারবোনা বলতে
কিছু যন্ত্রণাই তো, এর বেশিনা।
থাকুক।

Sunday, July 6, 2008

ছোট্ট তিনটি শব্দ

তোমার হাসি আমার প্রথম ভোর
স্পর্শ তোমার প্রথম শ্রাবণ ধারা
ছোট্টো কেবল তিনটি শব্দ দিয়ে
যায় কী বলো সবটা বলতে পারা?

সব হাসিতে সব খুশিতে তুমি
থাকছো পাশে, হাতের মাঝে হাত
কী যায় আসে আমার তবে, বলো?
আজ যদি হয় পৃথিবী বরবাদ?

কতো যে ভালো তোমায় বাসি আমি
আর কিছু কি আমার লাগে ভালো?
তুমি— আমার মনের সবটা জুড়ে
তোমায় ভালোবাসবো জনম ভরে।

Friday, June 27, 2008

নামহীন হাবিজাবি- ২

আহ্, কি যে ভাল লাগছে। আজকে যে আমাদের সেমেস্টার ফাইনাল শেষ হয়ে গেল। বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছি বলতে পারেন। সত্যি কথা বলতে আমার মনেহয় যেন ভাল থাকাটা আসলেই আপেক্ষিক একটা ব্যাপার। বোঝার চেষ্টা করছি আসলেই কতোটা ভাল আছি এখন? মাথাটা প্রচণ্ড ধরেছে, কালকে সারারাত না ঘুমিয়ে কাটানোর জের চলছে এখনো। শেষ কবে যে নির্ভার একটা রাত কাটাতে পেরেছি নিজেই জানিনা। মাঝে মাঝে খুব তাই ফিরে যেতে ইচ্ছে করে সেই সময়টায়।সাথে 'ফ্লু' ব্যাটার অত্যাচারটাও সহ্য করে আছি।ধরেছে সেই কবে এখনো যাবার নাম নেই।আমার এদিকে একশোবার নাক মুছতে মুছতে অবস্থা কাহিল।

আমার খুব প্রিয় একটা গান বাজছে ল্যাপিতে। শুনেছেন কিনা আপনারা বলতে পারবোনা। শুভমিতার গাওয়া একটা গান, নাম- “উড়ে যা না”। অসাধারণ সুন্দর একটা গান। বহুদিন এমন চমৎকার সুর আর কথার গান শোনা হয়নি।কথাগুলো কেমন যেন উদাস করা! সময় পেলে শুনে দেখতে পারেন। নিঃসন্দেহে আপনাদের মন ছুঁয়ে যাবে তা বলে দিতে পারি।

পাঠক-পাঠিকাদের কি জানতে ইচ্ছা করছে আমার পরীক্ষা কেমন হল আজকে? সত্যি করে বলতে গেলে বলতে হয়- আমি নিজেই জানিনা কেমন দিলাম! আমাকে কেউ জিজ্ঞেস করলে আমি বেশিরভাগ সময় এমন উত্তর দিয়ে থাকি। পরীক্ষা হল থেকে বের হলে আমি আসলে বলতে পারিনা কোন প্রশ্নের উত্তর কি লিখে দিয়ে আসলাম। কিংবা বলতে পারেন হয়তো মনে করতেই চাইনা। আমার সহপাঠীদের দেখি ওরা পরীক্ষা হল থেকে বের হয়ে একে অন্যকে জিজ্ঞেস করে কেমন হল পরীক্ষা, কে কোন প্রশ্নের জন্য কি উত্তর লিখেছে এইসব আরকি। আমাকে জিজ্ঞেস করলে ওরা সবসময় একই উত্তর পায় তাই আজকাল জিজ্ঞেস করেনা। ওরা যখন এসব বিষয়ে আলোচনা করে আমি তখন ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে থাকি ওদের দিকে, প্রশ্ন করলে সেই একঘেঁয়ে উত্তর।

তবে বেশি নিরাশ হবার কিছু নাই, আমি অবশ্য এতটুকু বলতে পারি যে শতকরা কতভাগ প্রশ্নপত্রের উত্তর দিয়ে এসেছি।হিসেব করে দেখলাম শতকরা ৯৫ ভাগ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে এসেছি আজকে।এখন আমার খুব খুব প্রিয় একজনের কথা মনে হচ্ছে, এই কথা শুনলে যে এখন গম্ভীর গলায় আমাকে বলতঃ “বাকি প্রশ্নের উত্তর ছেড়ে দিয়ে আসলি কেন? ওগুলার উত্তর করে আসা উচিত ছিল, তোর সাথে কথা বন্ধ।“ সত্যি কথা বলতে কি ঐ বাকি ৫ ভাগে উত্তরও আমার জানা ছিল। কেন যে লিখলাম না নিজেই জানিনা, হঠাৎ করে তোর ঝাড়ির কথা মনে পড়ে গেল। কলমটা যেন আর চলতেই চাইলোনা।

Thursday, June 19, 2008

নামহীন হাবিজাবি- ১

কিছু লিখতে ইচ্ছে করছিল, তাই এখানে চলে আসলাম।এখানে হাবিজাবি কিছু লিখে আমার হাতের তালুর চুলকানি কমানোই মূল উদ্দেশ্য।ইদানিং বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়ছি, নিজের জন্য সময় বের করতেই হিমশিম খেতে হয়।দেখতে দেখতে আমার শিক্ষাজীবনের আরেকটি সেমেস্টার চলে যাচ্ছে।এখনো মনে হচ্ছে এইতো সেদিন না সেমেস্টার শুরু করলাম।আমাদের সেমেস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে এখন।সত্যি কথা বলতে কি প্রত্যেক সেমেস্টার শেষ হলে যখন আমাদের ফাইনালের জন্য বসতে হয় তখনই আমার এই কথাটা বারবার মনে আসে।আর প্রতিবারই পণ করি পরের সেমেস্টারের গোড়া থেকেই ভাল করে পড়াশুনা শুরু করব।কিন্তু বলাই বাহুল্য সেটি কখনোই করা হয়ে ওঠেনা।এখনো আরো দুটো পরীক্ষা বাকি আছ।সামনের পরীক্ষা আইন বিষয়ক খটমটে একটা ইউনিট।এধরনের ইউনিট পড়ার বেশ ভাল একটি গুণ আছে, আপনাদের যদি ইনসোমনিয়া জাতীয় অসুখ থেকেও থাকে তাহলেও গভীর ঘুমে তলিয়ে যেতে কোনই সমস্যা হবেনা।আমার কথাই ধরুন, নিজেও জানিনা কতবার যে পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে গেছি!!অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই যে কেমন ফাঁকিবাজ ছেলেরে বাবা!!অবাক হবার কিছুই নেই,কারণ আমি বরাবরই এমন ফাঁকিবাজ ধরনের ছাত্র ছিলাম,আছি এবং ভবিষ্যতেও যেন থাকতে পারি সেজন্য খাস দিলে আপনাদের কাছে থেকে দোয়া কামনা করছি।অবশ্যই দোয়া করতে ভুলবেন না কিন্তু!!আমার আম্মু বলেন আমি এই সু(নাকি কু)-অভ্যাস উত্তরাধিকার সূত্রে আব্বুর কাছে থেকে পেয়েছি।যার কাছে থেকেই পেয়ে থাকি আমি কিন্তু খুব খুশি।

Tuesday, May 27, 2008

২৭মে, ২০০৮::: বিকাল ৫ টা

আমার প্রিয় কিছু মানুষের কথা এখন খুব বেশি করে মনে পড়ছে।যাদের সাথে আমি সময় কাটাতে পছন্দ করি।সকল সাধারণের মাঝেও যাদের সাথে থাকলে প্রতিটি মূহুর্ত যেন অসম্ভব সুন্দর মনেহয়।তাদের সংগে থাকলে আমি ভুলে থাকতে পারি সকল দুঃশ্চিন্তা সকল ব্যাথা সেই সময়ের জন্য।জানিনা কেন যে আজকে বড়ই একা মনে হচ্ছে নিজেকে।যেন দুঃসময়ে আমার পাশে দাঁড়াবার মতন কেউ নেই।কেউ এই আমার ঘাড়ে হাত রেখে কিছু স্বান্তনা বাণী শোনাবে যে।খুব স্বস্তিকর অনুভূতি যে এটা আমার জন্যে নয় সেটা বোধহয় আপনাদের বলে দিতে হবেনা।মাঝে মাঝে আমার এমন অস্বস্তিকর অনুভূতিটি হয়।আমার উপায় জানা নেই কিভাবে এর থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব চিরতরে?নাকি এটা খুব সাধারণ কিছু যার থেকে আমাদের নিস্তার নেই?আসলেই তো আমরা বড়ই একা এই পৃথিবীতে তাইনা!পৃথিবী ছেড়ে যেতেও হবে আমাদের একা।আর এটাই চরম সত্য।

Saturday, May 24, 2008

এলিজিঃ তোমার জন্য ...

হাসছি তো হাসছিই
নিজের রসিকতায় নিজেই
ভেতরটায় কে যেন কাঁদছে
নিরন্তর জানান দিয়ে যাচ্ছে
তার অশুভ উপস্থিতি

বন্ধুরা মিলে মেতে আছি উল্লাসে
ভেতরে যে শুধুই হাহাকার
সাবধানে চেপে রাখি, তুমি কখনোই শুনতে পাবেনা তা

হাসছি আমি যখন দেখছি তোমায়
তুমিও হেসে উঠছো আমার চোখে রেখে চোখ
কিন্তু তোমার সে দৃষ্টি নেই, দেখতে পাও না আমার অন্তর
কীভাবে যে রক্তাক্ত হয় প্রতিনিয়ত

তবুও হেসে চলেছি
তোমাকে বিদায় দিতে হাত নাড়ছি সোল্লাসে!
ভেতরে আহত হৃদয়ের আর্তচিৎকার
রক্তাক্ত হয়ে চলেছে, প্রতিনিয়ত।

---------------------------------

প্রথম প্রকাশঃ সচলায়তন, ২০০৮।

Thursday, May 22, 2008

যদি কোনদিন ...

যদি কোনদিন ঈশ্বর বলতেন আমায়
চেয়ে নাও, তোমার যা আছে চাইবার
আমি ঈশ্বরকে বলতাম
প্রতিটি সকাল যেন এমন হয়,
তোমার
নিঃশ্বাসের স্পর্শে যেন জেগে উঠি
যেন অনুভব করতে পারি
তোমার
ওষ্ঠের উষ্ণতা আমার অধরে
যেন তোমার
সান্নিধ্য বেষ্টন করে থাকে আমার অস্তিত্ব

আমার যে জানা হয়ে গেছে
পাবোনা কারো সাথে সেই অনুভূতি
যা পেয়েছি শুধুই তোমার সাথে।

Thursday, May 8, 2008

তাকে আমি কখনো দেখিনি....

ঘুমভাঙ্গা সকালের সূর্যোদয়ে তুমি আছো
যেন হেসে তুমি বলছো, "শুভ সকাল তোমাকে"।

সবুজ ঘাসের উপর জমে থাকা
ভোরের শিশির কণার চেয়েও দ্যুতিময়
তোমার হাসি যেন বলছে, "দিনটা ভাল কাটুক তোমার।"

কাঠফাটা রোদের ক্লান্ত দুপুরে
প্রত্যাশিত একটু ছায়ার চেয়েও
স্বস্তিকর তোমার হাতের স্পর্শ যেন
ভুলিয়ে দিচ্ছে সকল ক্লান্তি।

সমস্ত সুন্দরের মাঝে অনুভব করি তোমাকে
গত মুহূর্ত থেকেও আরো বেশি
দিনশেষে চাঁদের একফালি আলো হয়ে
যেন তুমি বলছো আমায়,
"শুভরাত্রি তোমায়, ঘুমিয়ে পড়ো এবার।
আমিতো আছিই তোমার পাশে, সবসময়।"

Tuesday, May 6, 2008

মেজাজ খুবই খারাপ ...

কিছুক্ষন আগেও আমার মনটা বেশ ভাল ছিল। কয়েক মিনিট আগেই একজন আমার মুঠোফোনে ফোন করেছিল। তারপর থেকেই একটু বিরক্ত লাগছে কোন এক অজানা কারনে।এমনটি নয় যে আমি তার সাথে কথা বলতে চাইনা।বরং বলতে পারেন যারা আমাকে ফোন করলে আমি সবচেয়ে খুশি হই তাদের মধ্যেই একজন ছিল।কিন্তু তাও বিরক্তির সূত্রপাত কোথা থেকে হল এখনও আমার বোধগম্য হচ্ছেনা।হয়তোবা ও যা বলেছিল আমার ভালো লাগেনি শুনতে।অথবা অন্য কোনও কারনে।মেজাজটা আমার এখন তিরিক্ষি হয়ে আছে একদম।চুপ করে শান্ত থাকার চেষ্টা করছি বলতে পারেন।কাউকে প্রশ্ন করে আমি উত্তর না পেলে খুবই বিরক্ত হই।কারন আমি কাউকে এমন প্রশ্ন করিনা যেটার উত্তর তার না জানার কথা।যখন কেউ সেই কাংখিত উত্তরটি না দিয়ে এমন কথা বলে যে, "জানতে হবেনা তোমাকে" অথবা মিথ্যা করে বলে- "আমি জানিনা"... তখন কি আপনারাও বিরক্ত হবেন না??প্রশ্ন রইল।আমাকে মনেহয় কেউ কোনদিন উপদেশ দিয়েছিল যে, মেজাজ খারাপ থাকলে অথবা খুবই বিরক্ত হলে নাকি খাতার মধ্যে কিছু লিখলে সেটি ভাল বোধ করতে সাহায্য করে।আমার বেলায় কিন্তু বেশ কাজ করে এটা। আমার মনকে অন্যদিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করে বলতে পারেন।তবে শর্ত হল আমাকে বাংলায় কিছু লিখতে হবে তাহলে নইলে কাজ হবার সম্ভাবনা নেই।অনেকদিন পরে লিখলাম এখানে।এখন মনটা একটু স্থির হয়েছে বলতে পারেন।

Thursday, April 24, 2008

Monday, April 14, 2008

সাহচর্য

দু'চোখ বুজলে যেন
তোমার অবয়ব দেখি
তোমার চোখে যেন
সারা বিশ্ব দেখি,
তুমিই যে সমগ্র বিশ্ব আমার।

জানিনা কখন তুমি
এসেছো এতোটা কাছে
করেছো এতোটা আপন আমায়
এমন কোনো কালিতে লেখা হয়ে গেছে তোমার নাম
যা কখনোই মুছে যাবেনা
মুছে দেওয়া যাবেনা।

প্রতিটি মুহুর্তে যেন
অনুভব করছি তোমায়
সব দূরত্বই যেন নগণ্য আমাদের মাঝে
তুমি আছো আমার পাশে
নীরবে বলছো আমায়
পারবো সব বাধা ডিঙ্গাতে
কারণ, তুমি যে আছো আমার পাশে।


toxoid_toxaemia
15th April 2008
12.38am
---------------------------------------
প্রথম প্রকাশঃ রংগন(বৈশাখের দ্বিতীয় অন্তর্জাল পত্রিকা), ২০০৮।

Wednesday, January 16, 2008

Saturday, January 12, 2008