Monday, October 4, 2010

ত্রিভুজ প্রেম এবং একটি কথোপকথন (আব্‌জাব)

কথা বলা শেষ করে মোবাইলের স্ক্রীনের দিকে তাকালাম। পঁচিশ মিনিট ছত্রিশ সেকেন্ড কথা বলেছি। মনে হল, অকারণেই এতোগুলো টাকা নষ্ট করলাম। আহমেদকে ফোন করেছিলাম। আমরা একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। ছেলেটা আমাকে তার অনেক ভাল বন্ধু মনে করলেও আমি তাকে কখনোই সেভাবে দেখিনি। বরং মাঝে মাঝে আহমেদের কথা-বার্তা বেশ বিরক্তির উদ্রেক করতো। ইদানিং আগের চাইতে অনেক কম ফোনে কথা হয় তবুও ওর কিছু কথা শুনলে বিরক্ত লাগে।

ফোনটা রাখতে না রাখতেই নদীর কাছ থেকে টেক্সট মেসেজ পেলাম, পড়লাম কি লিখেছে। মেয়েটা অসম্ভব ভাল; সবসময়ই আমার খোঁজ-খবর রাখে। তাই জিজ্ঞেস করছিল যে কাজ থেকে আসার পর খেয়েছি কিনা? কাজ থেকে এসেই যে আহমেদের সাথে কথা বললাম এতোক্ষণ সেটা তাকে জানালাম। এরপর বললাম তাকে মেসেঞ্জারে আসতে; যাতে বিনে পয়সায় কিছুটা বকবক করা যায়। নদীর পরিচয়ই তো দেয়া হয়নি, নদী হচ্ছে আমার প্রেমিকা।

দু’জনেই মেসেঞ্জারে ঢোকার পর,

নদী- কি করো ?

আমি- আহমেদের সাথে ফোনে কথা বললাম এতোক্ষণ, এখন তোমার সাথে চ্যাট করি।

নদী- আহমেদ ফোন করেছিল নাকি তুমি ফোন দিসিলা ?

আমি- আমি যখন কাজে ছিলাম তখন ফোন দিয়েছিল। কথা হয়নি। তাই আমি আবার কল দিয়েছিলাম।

নদী- কি বলে ?

আমি- আর বলোনা, ছাগলটা আবার ঝামেলায় জড়াইসে। আমাকে এখন বলে “দোস্ত, বাঁচা আমাকে”।

নদী- কিসের ঝামেলায় পড়সে এইবার ?

আমি- আহমেদ আমার ক্লাসের এক মেয়েকে পছন্দ করতো। মেয়েটির নাম নিতিশা। কিন্তু নিতিশা কখনোই আহমেদকে পছন্দ করেনি। আর নিতিশা আমাদের অন্য আরেক বন্ধুকে পছন্দ করে। ছেলেটার নাম রাজ। নিতিশা যেহেতু আহমেদকে পছন্দ করেনা তাই আহমেদ রাজের নামে নানারকম আজেবাজে কথা বলেছে নিতিশার কাছে। নিতিশা সেই কথাগুলো আবার রাজকে গিয়ে বলে দিয়েছে এবং সেই থেকে তাদের মধ্যে ঝগড়ার সূত্রপাত। রাজ এখন মহা ক্ষ্যাপা আহমেদের উপর। এবং আহমেদকে ধরে পেটাতে চায়।

নদী- কিন্তু আহমেদকে মারতে চায় ক্যান ? কথা বলে সমাধান কি সম্ভব না ?

আমি- আমি তো রাজকে চিনি। পালোয়ান মানুষদের মাথা এমনিতেই একটু গরম থাকে সবসময়। আর আমার মনেহয় আহমেদের মাইর খাওয়াটাই উচিত। ও এমন কাজ করতে গেসে ক্যান ?

নদী- ছিঃ তুমি এই কথা বলতে পারলা ?

আমি- শোন, আমি যা বলছি ঠিকই বলছি। আর আহমেদের মার খেলেও তেমন সমস্যা হবেনা।

নদী- কেন ? কেন ?

আমি- কারণ, আহমেদের আব্বা মানে আঙ্কেল একজন ডাক্তার, তাই উনি তার ছেলের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারবেন। আন্টি হচ্ছেন গৃহিনী, তাই আহমেদের সেবা-শুশ্রুষা করতে উনার তেমন সমস্যাই হবেনা। আর আহমেদের ছোট বোন তার ভাইয়ের পিটুনি খাওয়ার বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে পারবে।

নদী- তুমি এতো শয়তান ক্যান ?

আমি- শয়তানি করলাম কোথায় ? আমি তোমাকে যুক্তিগুলো বোঝানোর চেষ্টা করছি।

নদী- কিন্তু তুমিতো নিশ্চয়ই এগুলো বলোনি আহমেদকে, তাহলে কি বলেছ ?

আমি- অবশ্যই এটা বলতে তো পারিনা। ওকে বললাম রাজকে বেশি ভয় লাগলে পুলিশে ডায়রি করে রাখতে। আর ফোনে হুমকি দিলে সেটা রেকর্ড করে পুলিশকে যেন দিয়ে দেয়। আর অবশ্যই নিতিশা এবং রাজের সাথে কোনও রকম যোগাযোগ যেন না করে। সম্ভব হলে ফোন নম্বরে পরিবর্তন করার জন্যেও উপদেশ দিলাম।

Friday, October 1, 2010

নামহীন হাবিজাবি - ৬

সময়ের স্রোতে ভেসে
ব্যস্ত এই জীবন আমার
অখণ্ড অবসরে শুধু
তোমাকেই পেতে মন চায়
এতো কাছে তবু
একাকী সময় গুণি
প্রহরগুলো যেন
আরো দীর্ঘ মনেহয়
একাকী এই আমি
বসে রই নীরবে
তোমার অপেক্ষায় ...