Sunday, March 1, 2009

দৈনন্দিন স্বাস্থ্যকর খাবার

সারাদিন কাজ আর কাজ, উদয়াস্ত খাটুনি, হাতে সময় নেই, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া অগ্রাধিকার পায় না। কোনও কোন দিন অনেক বেলা ভরপেট খাওয়া হয় না, চটজলদি হালকা নাস্তা হয়। তবে নাস্তাটি স্বাভাবিক হলেই হলো। দু’বেলা আহারের মধ্যে যদি ক্ষুধা লাগে, তাহলে শরীরে পুষ্টি চাই, বোঝা গেলো। তাই ক্ষুধা মেটাতে কিছু একটা মুখে দিতে হয়। উল্টোপাল্টা নাস্তা খেলে কিন্তু সমস্যা। নাস্তায় যদি বেশি চর্বি ও শর্করা থাকে তাহলে রক্তে পরবর্তীতে কোলেস্টেরল বাড়ে, ওজন বাড়ে শরীরে, পরবর্তীতে হতে পারে নানা জটিলতা যেমন হৃদরোগ, কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া রক্তে এবং ডায়েবেটিস। সুসংবাদ হলো এই যে আজকাল স্বাস্থ্যকর খাবার সম্বন্ধে সচেতন হচ্ছে মানুষ সেজন্য অনেক খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লোফ্যাট লোশর্করা খাবার তৈরি করছে যা স্বাদে কোনও ভিন্নতা নেই প্রকৃত খাবারের সাথে।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যের তালিকা যখন প্রস্তুত করবেন তখন কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে-

খাবেন প্রচুর ফল ও শাক-সব্জি…
এতে ক্যালেরি ও চর্বি কমে। এছাড়া এগুলোতে রয়েছে ভিটামিন ও অন্যান্য এন্টিঅক্সিডেন্ট।
সম্পৃক্ত চর্বির দিকে লক্ষ্য রাখতে হবেঃ যত কম সম্ভব, সম্পৃক্ত চর্বি খাওয়া কমাতে হবে। কারণ এরকম চর্বি বেশি খেলে রক্তে বাড়ে কোলেস্টেরোল। তেলে ঘিয়ে ভাজা খাবার, প্রাণীজ চর্বিতে রয়েছে সম্পৃক্ত চর্বি। সে বিবেচনায় কচি মোরগ, মাছ এগুলো লাল গোস্ত(যেমন-গরু/ছাগলের মাংস) থেকে অনেক ভাল।

যে খাদ্য রান্না হচ্ছে সেদিকেও নজর রাখুন…
আংশিক হাইড্রোজিনেটেড উদ্ভিজ তৈল, যা মার্জারিন ও শর্টেনিং-এ ব্যবহৃত হয়, এতে এক ধরনের চর্বি থাকে একে বলে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড। এগুলো খাওয়া এড়ানো উচিত, কারণ এতে রক্তে বাড়ে কোলেস্টেরল। ভাজা খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন কুকিস, চিপস ও ক্যান্ডিতেও এসব চর্বি পাওয়া যায়।
খাবারে যেসব তরল সস্ ছড়ানো হয়, সেগুলো কেমন হবে…
স্যালাড ড্রেসিং সস বা যেসব তরলে খাবার ডুবিয়ে খাওয়া হয়, সেগুলোতে যেন চর্বি থাকে খুব কম। সেই সস খাবারের উপর না ঢেলে পাশে রাখা ভালো। এতেও এসব কম খাওয়া হবে। দুদ্ধজাত প্রিয় খাদ্যের মধ্যে যেগুলোতে চর্বি কম সেগুলো খাওয়া ভাল। এতে চর্বি কম খাওয়া হবে। যেমন ফুলক্রিম দুধ বা দইয়ের বদলে লোফ্যাট দই বা ক্রিম ছাড়া দুধ ভাল।

শ্বেতসার হলো শক্তির গুরুত্বপূর্ণ এবং দ্রুত উৎস…

এগুলো শরীরে শর্করায় পরিণত হয়, তাই বেশি বেশি শ্বেতসার খেলে দেহে ওজন বাড়ে এবং রক্তে বাড়ে শর্করা, বিশেষ করে ডায়েবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে তো বটেই। এছাড়া আগের কিছু গবেষণায় দেখা গেছে খুব বেশি শ্বেতসার খেলে হিতকরী কোলেস্টেরল এইচডিএল রক্তে হ্রাস পায়। গোটা শস্য যেমন গমের রুটি, জইচূর্ণ -এতে ময়দা কম, আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ কম। বাদাম, বীজ এসবও ভালো নাস্তা তবে এতে যেন লবন যেন না থাকে। এগুলোতে রয়েছে প্রচুর অসম্পৃক্ত চর্বি, যা রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক। বাদাম, আখরোট এতে রয়েছে ওমেগা-৩ উপাদান, যা ক্ষতিকর এলডিএল কমাতে পারে আবার হিতকরী এইচডিএল বাড়াতে পারে। লাউয়ের বীচি এবং সূর্যমুখীর বীজ এগুলোতে আছে ভিটামিন ই, বি ভিটামিন ও খনিজ। নিবন্ধটি পড়ে মনে হবে যে খাবারে এত বিকল্প আছে, তত বৈচিত্র্য রয়েছে খাবারের মধ্যে এগুলো চেষ্টা করে দেখলে ক্ষতি কি? কেন খাবো ফাস্টফুড, তেলেভাজা খাবার ? নোংরা ইটালিয়ান রেস্তোরাঁর পাশে নর্দমার উপর বসে কেন এসব ঝালমুড়ি, ফুচকা, তেলেভাজা মোগলাই খাওয়া? কেবলমাত্র হৃদপিন্ডের মতন কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কেন, দেহের পুরোটাই সুস্থ রাখা তো উচিত।

No comments: